চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় সিএনজি অটোরিকশার ধাক্কায় সাইদুল হক (৫৪) নামে এক গরিব চানাচুর বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। সোমবার (২১ জুলাই) রাতে উপজেলার রানীরহাট ঠান্ডাছড়ি চা বাগানের প্রধান ফটকের পাশে রাস্তার ধারে তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সাইদুল হক পেশায় একজন ভ্রাম্যমাণ হকার ছিলেন। প্রতিদিনের মতো ঝুড়ি কাঁধে চানাচুর বিক্রি করতে বের হয়েছিলেন, আর ফেরেননি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে রানীরহাটের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় বসবাস করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। যদিও তিনি অন্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা, রাঙ্গুনিয়াতেই গড়ে তুলেছিলেন এক টুকরো সংসার।
স্থানীয়রা জানান, সাইদুল ছিলেন অত্যন্ত পরিশ্রমী ও শান্ত স্বভাবের মানুষ। তার কণ্ঠে ছিল সুমধুর ডাক— “চানাচুর নেবেন ভাই?” সকাল থেকে রাত অবধি গ্রামের বিভিন্ন মোড়, বাজার ও চা-বাগানের গেইটে ঘুরে ঘুরে চানাচুর বিক্রি করতেন। দিনশেষে যা পেতেন, তাই দিয়েই চলত সংসার।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রকিবুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। নিহতের শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন ছিল। ধারণা করছি, চলন্ত সিএনজির ধাক্কায় পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবারের অনুরোধে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।”
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটি একটি সড়ক দুর্ঘটনা বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে আমরা ঘটনাটি আরও খতিয়ে দেখছি, যদি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য থেকে থাকে।”
সাইদুল হকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার অভাব পূরণে পরিবারটি চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা এখন অসহায়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজসেবীদের এ বিষয়ে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
প্রতিনিধি: সৈয়দ মোঃ ইমরান হোসেন, রাঙ্গুনিয়া